Monday, March 31, 2014

সুদীপ্ত সিনড্রোম -------------- স্বরাজ দত্ত


################
শুধু তোর নাম কাঁপন ধরায়
রাজস্তম্ভে,
তোর দুটো চোখ আগুন জ্বালায়
হিংস্র দম্ভে
মিছিলে মিছিলে উদ্যত স্বর
শুধু তোর নাম,
তোর নামে ভেজা নতুন লড়াই
লহু আর ঘাম।

ঝড় উঠবেই জেনে গেছে
সব রক্তজীবি,
তোর স্বপ্নের লাল রঙ আজ
সিঁদুরে মেঘ
লক্ষ লক্ষ নিপীড়িত সব
কষছে হিসেব
তোর রক্তের শপথে ধুয়েছে
নিজ আবেগ।

প্রাসাদে, মিনারে, দেওয়ালে
দেওয়াল ছুঁয়ে,
সব লাল রঙে তোর
রক্তের দাবী,
মিছিলে, প্রশ্নে ওরা শুধু
ভয় পায়,
কমরেড, তুই এভাবেই
থেকে যাবি।

মতুয়া মহামেলা ঠাকুরনগর


















‘মোদিকে মানসিক হাসপাতালে ভর্তি করা উচিত’


‘মোদিকে মানসিক হাসপাতালে ভর্তি করা উচিত’


বিজেপির প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী নরেন্দ্র মোদিকে মানসিক হাসপাতালে ভর্তি করা দরকার বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয়তাবাদী কংগ্রেস দলের প্রধান শারদ পাওয়ার। তিনি বলেন, মোদি আবোল-তাবোল বকছেন।
গত রোববার কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী শারদ মহারাষ্ট্রে এক সমাবেশে এই মন্তব্য করেন। তিনি সেখানে এনসিপি প্রার্থী বিজয় ভামবলের পক্ষে প্রচারণা চালান।
শারদ বলেন, ‘স্বাধীনতা সংগ্রামে কংগ্রেস নেতাদের আত্মত্যাগের কথা মোদি জানেন না। এ কারণেই তিনি কংগ্রেসমুক্ত ভারত গড়ার কথা বলছেন। পিটিআই।

বিবস্ত্র করার হুমকি বিজেপি নেতার

বিবস্ত্র করার হুমকি বিজেপি নেতার


কংগ্রেসের শীর্ষ দুই নেতা সোনিয়া গান্ধী ও রাহুল গান্ধীকে বিবস্ত্র করে ইতালিতে পাঠিয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন বিজেপির বিধায়ক হীরালাল রেগার। উসকানিমূলক ওই বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ করেছে কংগ্রেস। পরে অবশ্য হীরালাল ওই বক্তব্যের জন্য দুঃখপ্রকাশ করেন। এর আগে কংগ্রেসের সাহারানপুর আসনের প্রার্থী ইমরান মাসুদ বিজেপির প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী নরেন্দ্র মোদিকে কেটে টুকরো টুকরো করা হবে বলে হুমকি দেন। ওই বক্তব্যের জন্য মাসুদকে গত শনিবার ভোরে গ্রেপ্তার করা হয়। জি নিউজ।

মুসলিম ভোট নিয়ে জটিল সমীকরণ


মুসলিম ভোট নিয়ে জটিল সমীকরণ


মুসলিম ভোটারদের অবস্থানকে ভারতের রাজনীতিতে অত্যন্ত রহস্যময় একটি বিষয় হিসেবে বিবেচনা করা হয়। বিশ্লেষকেরা মনে করেন, বিভিন্ন রাজ্যে ভোট দেওয়ার ক্ষেত্রে মুসলিমদের পছন্দের বিষয়টি কোনো ঐক্যবদ্ধ কৌশলের অংশ নয়, বরং এটি তৃণমূল পর্যায়ের বিভিন্ন পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে।
বিশাল ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে মুসলিমদের রয়েছে স্বতন্ত্র রাজনৈতিক আদর্শ ও পছন্দ। কৌশলগত কারণে এই সম্প্রদায়ের ভোট কেন্দ্রীয় ও আঞ্চলিক রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ নিয়ামক হয়ে ওঠে। কিন্তু মুসলিমরা কি কেবল ধর্মের ভিত্তিতেই নির্বাচনে ভোট দেন?
সেন্টার ফর দ্য স্টাডি অব ডেভেলপিং সোসাইটিজ (সিএসডিএস) ও লোকনীতিস ন্যাশনাল ইলেকশন স্টাডিজের (এনইএস) এক জরিপের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৯৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে অধিকাংশ মুসলিম ভোটার একটি নির্দিষ্ট দলের ওপর বেশি গুরুত্ব দিয়েছিলেন। ২০০৪ ও ২০০৯ সালের নির্বাচনেও একই রকম প্রবণতা গুরুত্ব পায়। এতে বোঝা যায়, গত তিনটি নির্বাচনে কোনো সম্প্রদায় ও গোষ্ঠীর প্রতি মুসলিমদের পছন্দ কম গুরুত্ব পেয়েছে।
দ্বিতীয় প্রশ্নটি হচ্ছে, মুসলিমরা কি ভোট দেওয়ার ক্ষেত্রে কোনো কৌশলের আশ্রয় নেন? এনইএসের তথ্য-উপাত্ত বলছে, সারা ভারতে মুসলমানদের পছন্দের শীর্ষে কংগ্রেস। এরপর যথাক্রমে সমাজবাদী পার্টি, বামপন্থী দলগুলো ও বিজেপির অবস্থান। তবে জাতীয় এই চিত্র আবার রাজ্যভেদে ভিন্ন হয়ে থাকে। উত্তর প্রদেশ ও গুজরাট রাজ্যে বিজেপির অবস্থানের তুলনা করলে বিষয়টি কিছুটা স্পষ্ট হয়।
তৃতীয় প্রশ্নটি হচ্ছে, জাতিভেদ প্রথা বা সামাজিক শ্রেণীর মতো বিষয়গুলো কি ভোটদানে প্রভাব ফেলে? রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা মুসলিম সম্প্রদায়ের বিষয়টিকে ‘গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক প্রভাবক’ হিসেবে বিবেচনা করেন না। এনইএসের গবেষণায় দেখা যায়, ভোট দেওয়ার ব্যাপারে মুসলিমরা বিভিন্ন সময়মতো বা পছন্দের পরিবর্তন করেন। তা ছাড়া, মুসলিমবিরোধী সহিংসতার ঘটনাগুলো নির্বাচনে তাদের অবস্থানের ওপর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে। দ্য হিন্দু।

ভোটের রাজনীতিতে উত্তাপ ছড়াচ্ছে সোনিয়ার ‘জাতীয়তা’ নিয়ে প্রশ্ন তুললেন মোদি


ভোটের রাজনীতিতে উত্তাপ ছড়াচ্ছে

সোনিয়ার ‘জাতীয়তা’ নিয়ে প্রশ্ন তুললেন মোদি


নরেন্দ্র মোদিনরেন্দ্র মোদিকংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীর ‘জাতীয়তা’ নিয়ে পরোক্ষে প্রশ্ন তুলে পুরোনো বিতর্ক ফের উসকে দিয়েছেন বিজেপির প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী নরেন্দ্র মোদি। সোনিয়া রাজনীতিতে আসার পর প্রতিটি লোকসভা নির্বাচনের আগে কোনো না কোনোভাবে এ বিষয় তোলার চেষ্টা হয়। এবার এ প্রশ্ন তুললেন খোদ প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী।
অরুণাচল প্রদেশে গতকাল সোমবার এক নির্বাচনী জনসভায় মোদি বলেন, ‘দেশের মানুষের দেশপ্রেমের সনদ সোনিয়ার কাছ থেকে নেওয়ার প্রয়োজন নেই।’ তিনি প্রশ্ন তোলেন, ‘কার নির্দেশে ইতালীয় নাবিকেরা দেশে ফিরে গিয়েছিল? সুপ্রিম কোর্ট হস্তক্ষেপ না করলে ওই দুই খুনিকে দেশে ফেরত এনে বিচার করা যেত না।’
সোনিয়ার বিরুদ্ধে হঠাৎ এভাবে আক্রমণের কারণ আগের দিন রোববার দিল্লিতে তাঁর (সোনিয়ার) নির্বাচনী ভাষণ। ওই ভাষণে মোদির নাম উল্লেখ না করে সোনিয়া বলেন, কেউ কেউ দেশপ্রেমের ঢাক বাজাতে শুরু করেছেন। কিন্তু তাঁরা ধর্মনিরপেক্ষতার মূল্যবোধে বিশ্বাস করেন না।
মোদি গতকাল সোনিয়ার নামোল্লেখ করেই বলেন, তিনি যা বলেছেন, তা দেশের ১২৫ কোটি মানুষের অপমান।
ইতালির দুই নাবিক গত বছর ভারতের কেরালা উপকূলে ভারতীয় দুই জেলেকে গুলি করে হত্যার পর তাঁদের আটক করা হয়। দুই নাবিক ইতালির নির্বাচনে ভোট দিয়ে আবার ফিরে আসার প্রতিশ্রুতি দিয়ে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানালে আদালত তা মঞ্জুর করেন। কিন্তু নির্বাচনের পর দুই নাবিক ভারতে ফিরতে অস্বীকার করেন। তখন সুপ্রিম কোর্ট নয়াদিল্লিতে নিযুক্ত ইতালির রাষ্ট্রদূতের ভারতত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। বাধ্য হয়ে দুই নাবিককে ভারতে ফেরত পাঠায় ইতালি। তাঁদের বিচার চলছে।

Prothom Alo

প্রচণ্ড গরম, তাই ভোরে আর সন্ধ্যায় প্রচারণা


প্রচণ্ড গরম, তাই ভোরে আর সন্ধ্যায় প্রচারণা


ভারতে সাধারণ নির্বাচনের দিন ঘনিয়ে আসছে। এর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে উত্তপ্ত হচ্ছে নির্বাচনী প্রচারণার মাঠ। একই সঙ্গে বেড়েছে প্রকৃতির উত্তাপ। কোনো কোনো রাজ্যে চলছে দাবদাহ। এতে নির্বাচনী প্রচারণাও ব্যাহত হচ্ছে।
ওডিশা রাজ্যের রাজধানী ভুবনেশ্বরে গত রোববার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪২ ডিগ্রি। রাজ্যজুড়ে চলছে দাবদাহ। চৈত্রের কাঠফাটা রোদ। রাজধানীর রাস্তাঘাট প্রায় জনশূন্য। এই গরমে নির্বাচনী প্রচারণায় নামা দুরূহ। সকালে কিংবা বিকেলের দিকে রোদের তাপ কিছুটা কম থাকে। আর তখনই প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক দলগুলোর নেতা-কর্মীরা ছাতা মাথায় ও চোখে রোদ চশমা পরে যান মানুষের কাছে।
ভারতের আবহাওয়া বিভাগ জানায়, মার্চে ভুবনেশ্বরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল রোববার। ১৯৫২ সাল থেকে এ পর্যন্ত শহরটিতে মাত্র চারবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২ রেকর্ড করা হয়। রাজ্যের বারহামপুর আসনে ভোট ১০ এপ্রিল। হাতে মাত্র কয়েকটা দিন। কিন্তু দিনের বেলায় অসহ্য গরমের মধ্যে নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে পারছেন না প্রার্থীসহ নেতা-কর্মীরা।
বিজেডির নেতা সুবাস মহরানা বলেন, ‘আমরা এখন দুই দফায় প্রচারণা চালাই। প্রথম দফায় সকাল আটটা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত এবং দ্বিতীয় দফায় বিকেল চারটা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত।’দ্য টেলিগ্রাফ।

মিসরে নির্বাচন মে মাসে


মিসরে নির্বাচন মে মাসে


মিসরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রথম দফার তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ২৬-২৭ মে। সেনাপ্রধান জেনারেল আবদুল ফাত্তাহ আল সিসি পদত্যাগ করে তাঁর প্রার্থিতা ঘোষণার পরদিন এ কথা জানাল দেশটির নির্বাচন কর্তৃপক্ষ।
রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে বলা হয়েছে, আজ সোমবার থেকে ২০ এপ্রিল পর্যন্ত মনোনয়নপত্র গ্রহণ করা হবে। বিরোধী দলের ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে গত বছর জুলাইয়ে দেশটির ইসলামপন্থী প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসির পতন হয়। আর এতে নেতৃত্ব দেন জেনারেল সিসি। সাংবাদিকেরা বলছেন, জনপ্রিয়তা পাওয়ায় এবং সেই সঙ্গে আর কোনো জোরালো প্রার্থী না থাকায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জেনারেল সিসি জয়ী হতে পারেন। বিবিসি।

ভোটের রাজনীতিতে উত্তাপ ছড়াচ্ছে বিজেপির লক্ষ্য প্রধানমন্ত্রী পদ দখল: সোনিয়া


ভোটের রাজনীতিতে উত্তাপ ছড়াচ্ছে

বিজেপির লক্ষ্য প্রধানমন্ত্রী পদ দখল: সোনিয়া


সোনিয়া গান্ধীসোনিয়া গান্ধীভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী নরেন্দ্র মোদির দিকে ইঙ্গিত করে ক্ষমতাসীন কংগ্রেসের সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী বলেছেন, এই দলটির একমাত্র লক্ষ্য প্রধানমন্ত্রীর পদ দখল করা। এটা করতে তারা জনগণকে ভুল পথে নিয়ে যাচ্ছে।
গতকাল সোমবার হরিয়ানা রাজ্যের মিয়াতে নির্বাচনী জনসভায় এসব কথা বলেন সোনিয়া। তিনি বলেন, নির্বাচন আসন্ন হওয়ায় বিজেপির নেতারা নতুন বেশ ধরেছেন। তাঁরা মায়াকান্না শুরু করেছেন। কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন সংযুক্ত প্রগতিশীল মোর্চার (ইউপিএ) ১০ বছরের শাসনামলে বিভিন্ন উন্নয়নকাজের কথা উল্লেখ করে সোনিয়া বলেন, এসব উন্নয়নকাজের অনেকগুলোই এখন নিজেদের করা বলে দাবি করছেন বিজেপির নেতারা।
জনসভায় উপস্থিত সমর্থকদের উদ্দেশে ইউপিএর চেয়ারপারসন সোনিয়া বলেন, ‘কংগ্রেসের ইতিহাস হলো জনগণের জন্য কাজ করা। আমরা জনগণের জন্য কী কাজ করেছি, তা আপনারা সামনেই দেখতে পান।’ সোনিয়া দাবি করেন, ইউপিএ সরকার গত ১০ বছরে ভারতের যে উন্নয়ন করেছে, কোনো অকংগ্রেসি সরকার তা কখনোই করতে পারেনি। বিজেপি এখন মায়াকান্না করে তাদের অতীতের কালো ইতিহাস লুকানোর চেষ্টা করছে।
সোনিয়া বলেন, আসন্ন লোকসভা নির্বাচন শুধু সামাজিক খাতের বিভিন্ন প্রকল্প ও সংস্কারের নির্বাচন নয়, এই নির্বাচন দেশের গণতান্ত্রিক কাঠামো রক্ষার নির্বাচন। তিনি বলেন, কংগ্রেস আবার ক্ষমতায় এলে হরিয়ানার কৃষকদের সব সমস্যা দূর করবে। এই এলাকার ভূমিহীন কৃষক ও দরিদ্রদের বাড়ি তৈরি করে দিতে তাঁর দল অঙ্গীকারবদ্ধ। কংগ্রেস-প্রধান বলেন, ‘আমরা এমন ভারত চাই না, যেখানে শুধু নির্দিষ্ট কিছু বিষয়ে উন্নয়ন হবে বা শুধু নির্দিষ্ট কিছু অধিকার থাকবে। আমরা পুরো ভারতকে ধর্মনিরপেক্ষ করে গড়তে চাই, যে দেশ হবে সবার।’
কংগ্রেসকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে সোনিয়া বলেন, তাঁর দল মানুষের মধ্যে ভেদাভেদে বিশ্বাস করে না। হিন্দুস্তান টাইমস।


বেড়ানো প্রবাল দ্বীপের হাতছানি


বেড়ানো

প্রবাল দ্বীপের হাতছানি


রাকিব কিশোর | আপডেট: ০০:৫৭, এপ্রিল ০১, ২০১৪ 

নীল সাগর আর নীল আকাশ মিলে গেছে যেন সেন্ট মার্টিনসে। ছবি: লেখকবাংলাদেশের সর্ব দক্ষিণে চারপাশের নীল পানিকে পাড়া-প্রতিবেশী বানিয়ে যে প্রবাল দ্বীপের বসবাস, সেটাই কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের ‘রুপালি দ্বীপ’, প্রবাল দ্বীপ। পুবের এলোমেলো পাহাড় আর পশ্চিমের নীল সাগরের মাঝখানে তার বাস। নারকেল জিঞ্জিরা নামেও ডাকা হয় এ দ্বীপটিকে।
.নীল সাগরের সাদা বালু আর টুকটুকে লাল কাঁকড়া দেখার টানে ছুটে গেছি স্বপ্নদ্বীপ সেন্ট মার্টিনে। সঙ্গে ছিলেন সারাক্ষণ হাসতে থাকা আরমান ভাই, হাসাতে থাকা রকি ভাই, চুপ মেরে থাকা অলি ভাই আর শাহেদ।
ছোট এই দ্বীপটা চাইলে হেঁটেই তিন ঘণ্টার মধ্যে পুরোটা ঘুরে বেড়ানো সম্ভব। তাই যাঁরা সকালে গিয়ে বিকেলেই ফেরত আসেন, তাঁরা কোনো মজাই পান না, এখানকার আসল মজা লুকিয়ে আছে বিকেল আর রাতগুলোয়। বিকেলবেলায় ভাটার টানে যখন সমুদ্রের পানি স্কুল ছুটির মতো সৈকত থেকে হুড়হাড় করে পালিয়ে যেতে থাকে, তখন প্রবালের খাঁজে খাঁজে হাঁটুপানিতে আটকে পড়ে রংধনু রঙের ছোট ছোট অনেক মাছের দল। শেষ বিকেলের এই মাছ দেখা সময়টা কাটতে না কাটতেই চলে আসে তারাভরা রাত। জোছনা এসে জড়িয়ে ধরে চিকচিকে বালুর সারা গা, নিথর কেয়াবনে শাঁ শাঁ করে ছুটে যায় ব্যস্ত বাতাস, সাগরের ফেনা আছড়ে পড়ে রুক্ষ প্রবালের গায়ে।
চাঁদের আলো গায়ে মাখা এই রুপালি দ্বীপে যিনি একবার জোছনা দেখেছেন, তিনি জেনেছেন—পূর্ণিমা কী জিনিস, চাঁদের হাসি কাকে বলে!

Prothom Alo
সেন্ট মার্টিনে খুব ভোরে সূয্যিমামা জাগার আগেই প্রাতর্ভ্রমণে বের হয় লাল কাঁকড়ার দল। তাদের নিজ পায়ে করা শিল্পকর্ম দেখলে আর কোন শিল্পীর কাজ মনে ধরবেনা আপনার। 
সেন্ট মার্টিনে গিয়েছিলাম দুটো কাজের জন্য। দেখা আর খাওয়া। বাংলাদেশের আর সব আনাচকানাচে গিয়ে খাওয়া নিয়ে বাছবিচার করলেও, সেখানে গিয়ে আমরা উদরপূর্তির বিষয়টায় রীতিমতো উদার হয়ে যাই। সারা দিন ছেঁড়া দ্বীপে টইটই করে ঘুরে পেটে রাক্ষুসে ক্ষুধা নিয়ে সন্ধ্যার সময় ফিরলাম বাজারে। উদ্দেশ্য, মাছের বারবিকিউ খাব। মাছ দেখে চক্ষু চড়কগাছ। কী বিশাল একেকটা! দোকানির প্লেটে শুয়ে আমাদের দিকে হাঁ করে তাকিয়ে আছে দেড়-দুই কেজি ওজনের রূপচাঁদা, টেকচাঁদা, কালাচাঁদা আর কোরালগুলো। চকচক করতে থাকা মাছগুলোর দিকে লোভনীয় দৃষ্টি ঢেলে দাম জানতে চাইলাম, ব্যাপক দর-কষাকষি শেষে দুটি বিশাল আকারের মাছ কিনলাম ৮৫০ টাকা দিয়ে, জীবনের সেরা বারবিকিউ খেলাম সেদিন। ফোলা পেট নিয়ে ঢুলতে ঢুলতে যখন সাগরের কিনারে এসে পা ডুবিয়ে দাঁড়ালাম, তখন ভরা পূর্ণিমার চাঁদকেও আড়াল করে দিল উত্তর-দক্ষিণে সোজা চলে যাওয়া দুধসাদা ছায়াপথ। তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চাঁদের আলোয় নাচতে থাকা বঙ্গোপসাগর জানান দিল, দুনিয়ার সবচেয়ে সুন্দর জায়গাগুলোর একটায় কী নিশ্চিন্তে ঘুরে বেড়ানো যায়।
যেভাবে যাবেন
ঢাকা থেকে টেকনাফ পর্যন্ত বাস যায়। সেখান থেকে সকাল সাড়ে নয়টায় জাহাজ ছেড়ে যায় সেন্ট মার্টিনের উদ্দেশে। নাফ নদী পেরিয়ে তিন ঘণ্টা পর আপনি পৌঁছে যাবেন নারকেলের দ্বীপে। থাকা-খাওয়ার জন্য বেশ কিছু হোটেল আছে। যদি মাছের বারবিকিউ খেতে চান, তাহলে দোকান থেকে সরাসরি না কিনে একটু হেঁটে চলে যান মাছের আড়তে, বড় বড় মাছ পাবেন, পাবেন শুঁটকিও। হোটেলগুলোয় আপনার পছন্দমতো রেঁধে দেবে মাছ। এখানে বিকাল তিনটার পর সবকিছু পাবেন অর্ধেক দামে। আরেকটা কথা, এখানে গেলে অবশ্যই এক রাত থাকবেন। পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর রাত আপনার জন্য লুকিয়ে রেখেছে জল-পাথরের এই রুপালি দ্বীপটা।

বাস থেকে নামিয়ে ধর্ষণ


বাস থেকে নামিয়ে ধর্ষণ


যশোর অফিস | আপডেট: ০১:৩১, এপ্রিল ০১, ২০১৪ |

যশোরের নওয়াপাড়ার আকিজ জুট মিলের স্টাফ বাস থেকে নামিয়ে দুই কিশোরী শ্রমিককে ধর্ষণ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত রোববার দিবাগত রাত একটার দিকে মনিরামপুর উপজেলার চন্ডীপুর গ্রামের মান্দারতলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে রাতেই তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আটক ব্যক্তিরা হলেন মনিরামপুরের বিজয়রামপুর গ্রামের হাফিজুর রহমান (২৮), জাহাঙ্গীর হোসেন (২৬) ও রিপন হোসেন (২৫)। এ বিষয়ে গতকাল সোমবার ধর্ষণের শিকার এক কিশোরীর মা বাদী হয়ে মনিরামপুর থানায় একটি মামলা করেছেন। মামলার এজাহারভুক্ত সাতজনের মধ্যে ওই তিনজনকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আমিনুল ইসলাম তাঁদের দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। এজাহারভুক্ত অন্যরা হচ্ছেন একই গ্রামের ফজলু, আমিনুল, ইউসুফ ও বিল্লাল।
ওই দুই কিশোরীর ডাক্তারি পরীক্ষা করা হয়েছে। তারা গতকাল আদালতে ২২ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের ভাষ্যমতে, শ্রমিকদের নির্দিষ্ট স্থানে নামাতে রাত সাড়ে ১২টা বেজে যায়। তখন বাসে ওই দুই কিশোরী, দুই কিশোর শ্রমিক, বাসের চালক ও চালকের সহকারী (হেলপার) ছিলেন। বাসটি মনিরামপুর-রাজগঞ্জ সড়কের মান্দারতলা এলাকায় গতিরোধক পার হওয়ার সময় ছয়-সাতজন যুবক বাসে উঠে চালককে মারধর করে। পরে চালক, সহকারী ও দুই কিশোর শ্রমিক দৌড়ে পালিয়ে যান। এ সময় যুবকেরা দুই কিশোরীকে ধরে পার্শ্ববর্তী কলাবাগানে নিয়ে যান। সেখানে হাফিজুর ও জাহাঙ্গীর তাদের ধর্ষণ করেন।
পরে চালক ও সহকারী ফিরে এসে কাউকে না পেয়ে বাস চালিয়ে থানায় গিয়ে পুলিশে খবর দেন। ঘটনার পর পর পুলিশ গিয়ে ধর্ষণের শিকার দুই কিশোরীকে উদ্ধার করে। এ সময় ওই এলাকা থেকে তিনজনকে আটক করা হয়।
মনিরামপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শরীফ হাবিবুর রহমান বলেন, তিনজনকে আটক করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। যশোরের সহকারী পুলিশ সুপার (খ সার্কেল) সৈয়দ মোস্তফা কামাল বলেন, আটক তিনজনের মধ্যে দুজনকে ধর্ষণের শিকার দুই নারী চিহ্নিত করেছে।

Prothom Alo

সরল গরল রাজনীতিতে সহনশীলতার ঘাটতি

সরল গরল

রাজনীতিতে সহনশীলতার ঘাটতি

Prothom Alo
মিজানুর রহমান খান | আপডেট: ০০:০৭, এপ্রিল ০১, ২০১৪ |

জেনারেল জিয়াউর রহমানকে দেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি দাবি করাকে কেন্দ্র করে রাজনীতিতে সহনশীলতার ঘাটতি আবারও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
এটা খতিয়ে দেখার সময় এসেছে যে অর্থহীন, অপ্রয়োজনীয় এবং অসত্য বক্তব্যকে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ কীভাবে গ্রহণ করে থাকে। সন্দেহ নেই ইংল্যান্ডের যে শহরটিতে বসে জিয়াপুত্র ও বিএনপির জ্যেষ্ঠ ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান প্রথম এই বিতর্কের সূচনা ঘটালেন, ওই শহরের ইতিহাসের সঙ্গেই জড়িয়ে আছে রাজনৈতিক শিক্ষা গ্রহণের দৃষ্টান্ত।
জাতীয় সংসদে যে ভাষায় প্রতিপক্ষকে আক্রমণ করা হয়েছে, সেটা গণতন্ত্রের ভাষা নয়। কথায় কথায় রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা করার হুমকি গণতান্ত্রিক সমাজ নির্মাণের পথে অন্তরায়। একই সঙ্গে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী, যিনি ৭২ ঘণ্টা আগে একজন বিদ্যুৎ প্রকৌশলীকে পিটিয়ে মাথা ফাটিয়েছেন, তিনি বলেছেন, ‘পাগল-ছাগলদের মাথা মুড়িয়ে দেওয়া দরকার। ওদের সাহস বেড়ে গেছে। মাথাটা নামিয়ে দিতে হবে।’
অন্যদিকে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, যিনি একটা দীর্ঘ সময় অপেক্ষাকৃত বাক্সংযমী হিসেবে পরিচিত ছিলেন, তিনি ক্রমেই সংযমহারা হিসেবে নিজেকে জাতির সামনে তুলে ধরছেন। রাষ্ট্রপতিতত্ত্বের পরে চামড়াতত্ত্ব দিয়েছেন। নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারী একটি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অথচ তিনি বিএনপির নেত্রীর সমালোচনা করতে গিয়ে যে ইঙ্গিত করেছেন, তাকে শালীন বলা যাবে না। জাসদের একজন নেতা বলেছেন, ‘ভদ্রমহিলা (খালেদা জিয়া) যে বক্তব্য রেখেছেন, তা জাতীয় সংসদ ও সংবিধানের নিয়মাবলির বরখেলাপ, রাষ্ট্রদ্রোহিতা।’ সংবাদপত্রের বিবরণ পড়ে আমরা বুঝতে পারিনি ঠিক কোন শব্দ ও বাক্যটি সংবিধানের নিয়মাবলির বাইরে গেছে। রাষ্ট্রদ্রোহিতা কীভাবে ঘটল?
এই যুক্তি অসমীচীন নয় যে যেকোনো নাগরিকের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা রয়েছে। জিয়াউর রহমানকে যে দেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি দাবি করেছেন তারেক রহমান এবং তাঁর মা, সেটা বাক্-স্বাধীনতার মধ্যে পড়ে। যদিও প্রচলিত আইন, যা খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সমর্থন, রক্ষণ ও নিরাপত্তা বিধান করে এসেছেন, সে রকমের একটি বিধানের আওতায় তাঁর ওই দাবি সংগতিপূর্ণ নয়। রাষ্ট্রপতিতত্ত্ব নিয়ে সহকর্মী সোহরাব হাসান এর আগে নিবন্ধ লিখেছেন। সুতরাং রাজনীতির দিকে যাচ্ছি না। আইনগত দিকটি খতিয়ে দেখব। আওয়ামী লীগ ও বিএনপি উভয়কেই বলব, এ রকমের একটি আইন আমাদের থাকা উচিত কি না?
এই বিধান সম্পর্কে প্রথম দৃষ্টি আকর্ষণ করিয়েছিলেন ব্যারিস্টার সৈয়দ ইশতিয়াক আহমেদ। তখন মাঝেমধ্যে জিয়াউর রহমানকে স্বাধীনতার ঘোষক বলা নিয়ে বিতর্ক হতো। আওয়ামী লীগ প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ হতো। গতকাল জিয়াউর রহমানকে প্রথম রাষ্ট্রপতি বলা নিয়ে বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে একটি মানহানির মামলা করা হয়েছে। এটা অবশ্য মানহানি মামলার বিষয় হতে পারে না। রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি আদালতে যুক্তি নিবেদন করতে পারেন যে জিয়াউর রহমানকে প্রথম রাষ্ট্রপতি বলা দণ্ডবিধির পরিপন্থী। কারণ, দণ্ডবিধি বলেছে, বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের বিরুদ্ধাচরণ এমনকি আকার-ইঙ্গিতেও তা করা হলে তার বিরুদ্ধে প্রতিকার চাওয়া যাবে। এটা বিস্ময়কর যে বার-অ্যাট-ল ডিগ্রি নিয়েও বিএনপির নেতা রফিকুল ইসলাম মিয়া অদ্ভুত যুক্তি খাড়া করেছেন। স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র বাংলাদেশের জন্মসনদ। আবদুল মতিন খসরু আইনমন্ত্রী থাকাকালে এটি বাংলাদেশের সংবিধানের সঙ্গে যুক্ত করেছিলেন।
রফিকুল ইসলাম মিয়া বলেছেন, ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ থেকে ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল পর্যন্ত তাহলে দেশের রাষ্ট্রপতি কে ছিলেন? আর তথ্য হিসেবে এটা সঠিক যে জিয়াউর রহমান কালুরঘাট বেতারকেন্দ্র থেকে যেসব ঘোষণা দিয়েছিলেন, তার মধ্যে তিনি একটিবারের জন্য হলেও নিজেকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা দিয়েছিলেন। কিন্তু এর অর্থ এই নয় যে খালেদা জিয়া তাঁকে প্রথম রাষ্ট্রপতি হিসেবে আইনানুগভাবে দাবি করতে পারেন। স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে পরিষ্কার লেখা আছে, বাংলাদেশ রাষ্ট্রের অন্তর্বর্তীকালীন সংবিধান ২৬ মার্চ ১৯৭১ থেকে কার্যকর হয়েছে বলে গণ্য হবে। এই ঘোষণাপত্র পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানের ১৫০ অনুচ্ছেদের দুই উপ-অনুচ্ছেদের আওতায় সপ্তম তফসিলে সন্নিবেশিত রয়েছে।
এটা সবারই জানা যে শপথ গ্রহণ ছাড়া সংবিধানের কোনো পদধারী দায়িত্ব গ্রহণ করতে পারেন না। এবং আমরা স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে দেখি, ‘সংবিধান প্রণীত না হওয়া পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রপতি থাকবেন এবং সৈয়দ নজরুল ইসলাম প্রজাতন্ত্রের উপরাষ্ট্রপতি থাকবেন।’ এতে আরও লেখা আছে, ‘আমরা বাংলাদেশের জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধিগণ আরও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিতেছি যে কোনো কারণে রাষ্ট্রপতি না থাকা বা রাষ্ট্রপতি তাঁহার কার্যভার গ্রহণ করিতে অসমর্থ হওয়া বা তাঁর ক্ষমতা প্রয়োগ করিতে অসমর্থ হওয়ার ক্ষেত্রে, রাষ্ট্রপতির উপর এতদ্বারা অর্পিত সমুদয় ক্ষমতা, কর্তব্য ও দায়িত্ব উপরাষ্ট্রপতির থাকিবে এবং তিনি উহা প্রয়োগ ও পালন করিবেন।’
সুতরাং ২৬ মার্চ থেকে ১০ এপ্রিল পর্যন্ত বাংলাদেশের কোনো সাংবিধানিক শূন্যতা সৃষ্টি হয়নি। সুতরাং কোনো অবস্থাতেই বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান, এটা প্রতিষ্ঠিত করা যাবে না। তবে এ ক্ষেত্রেও তিনি হয়তো প্রথম রাষ্ট্রপতি ঘোষক বলে তাঁর অনুসারীরা চায়ের টেবিলে আলোচনা করতে পারেন। বিএনপির যুক্তি আরও একটি কারণে অচল। কারণ, জেনারেল জিয়া নিজেকে রাষ্ট্রপতি হিসেবে দাবি করার অল্প সময়ের ব্যবধানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণা উচ্চারণ করেছিলেন। সুতরাং জিয়া তাঁর জীবদ্দশায় কেন নিজেকে প্রথম রাষ্ট্রপতি দূরে থাক, স্বাধীনতার ঘোষক হিসেবেও জাহির করেননি, সেটা বোধগম্য।
গত ২৯ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আর সি মজুমদার হলে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক সংবিধান পর্যালোচনা শীর্ষক একটি আলোচনার আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে বাহাত্তরের সংবিধানে কীভাবে ব্যক্তিকেন্দ্রিকতা সৃষ্টি করা হয়েছিল, তার ওপর বেশি আলো ফেলা হয়েছে। আলোচনায় অংশ নিয়ে বলেছিলাম, বাহাত্তরের সংবিধানপ্রণেতাদের দোষ দিয়ে লাভ নেই। কারণ, বাহাত্তরের সংবিধান ৪২ বছর ধরে বাংলাদেশের সব ধরনের নেতা গ্রহণ, অনুসরণ ও সমর্থন করে চলেছেন। ১৭ গবেষক উল্লেখ করেছেন, বঙ্গবন্ধু কীভাবে চতুর্থ সংশোধনীতে নিজেকে প্রধানমন্ত্রী থেকে বিনা ভোটে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত করিয়ে নিয়েছিলেন। এই যুক্তি কি অসংগত যে জিয়াও বিনা নির্বাচনে নিজেকে রাষ্ট্রপতি করেছিলেন?
প্রথম রাষ্ট্রপতি হওয়া প্রসঙ্গে তারেক রহমান ও খালেদা জিয়াকে যে কথাটা স্মরণ করিয়ে দেওয়া দরকার, তা হলো ক্ষমতা কুক্ষিগত করার ক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধুকে প্রত্যেক সামরিক ও বেসামরিক শাসক অতিক্রম করে গিয়েছেন। ত্রয়োদশ সংশোধনী মামলার বিতর্কিত রায় বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হককে বিতর্কে ফেলেছে। কিন্তু পঞ্চম সংশোধনী মামলার রায়ে তিনি যে অসাধারণ যুক্তির অবতারণা করেছেন, তা খণ্ডন করে কার সাধ্য?
আজ সংসদে বিএনপির নেতাদের আক্রমণ করতে শালীনতার সীমা অতিক্রম করার দরকার নেই। শুধু বিএনপিকে স্মরণ করিয়ে দেওয়া দরকার যে জেনারেল ক্রমওয়েল, যিনি ১৬৫৩ সালে নিজেকে লর্ড প্রটেক্টর অব ইংল্যান্ড ঘোষণা করেছিলেন। তিনি আইনের শাসন থেকে পালাতে পারেননি। ১৬৬১ সালে ব্রিটিশরা তাঁর বিচার করেছিল। বিএনপির নেতাদের উচিত হবে ইংল্যান্ডের ইতিহাস থেকে শিক্ষা গ্রহণ করা। তারেক রহমানের উচিত হবে জেনারেল অলিভার ক্রমওয়েলের সমাধি পরিদর্শন করা।
তবে জেনারেল অলিভার ক্রমওয়েল কিন্তু নিজেকে আইন সৃষ্টি করার স্বর্গীয় ক্ষমতাধর ঘোষণা করেননি। বঙ্গবন্ধু করেননি। জিয়াউর রহমান করেছেন। মধ্যযুগের ইংল্যান্ডও জিয়ার ফরমান দেখে লজ্জিত হতো। কারণ, ১৫৩৯ সালে ব্রিটেন শেষবারের মতো আইন করেছিল। রাজা সংসদ ছাড়াই আইন সৃষ্টি করতে পারবেন। কিন্তু সেটা ১৫৫৩ সালের মধ্যে বিলোপ করা হয়। আর এই বিলুপ্তির প্রায় ৪০০ বছর পরে জিয়াউর রহমান ১৯৭৯ সালের ৬ এপ্রিল ফরমান জারি করলেন। আজ থেকে সামরিক শাসন তুলে নেওয়া হলো; ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট যা জারি করা হয়েছিল। তবে এখন থেকে রাষ্ট্রপতি চাইলে যেকোনো সময় যেকোনো প্রয়োজনে তিনি তাঁর খুশিমতো ফরমান জারি করতে পারবেন। সংবিধান বা আইন তাঁকে বাধা দেবে না। সবার ওপরে ফরমান সত্য তাহার ওপরে আর কিছু নাই—এ রকমের একটি বিধান ৩২ বছর ধরে বাংলাদেশ বয়ে চলেছে।
সুতরাং প্রথম রাষ্ট্রপতি বিতর্ককে কেন্দ্র করে আত্মজিজ্ঞাসার জাগরণ ঘটুক, সেটাই প্রার্থনা করি।

মিজানুর রহমান খান: সাংবাদিক।
mrkhanbd@gmail.com

রাশিয়া-ইউক্রেন ইউক্রেন কি ভেঙে যেতে পারে?

রাশিয়া-ইউক্রেন

ইউক্রেন কি ভেঙে যেতে পারে?


মশিউল আলম | আপডেট: ০০:০৬, এপ্রিল ০১, ২০১৪ |

জন কেরি ও সের্গেই লাভরভইউক্রেন-সংকটকে কেন্দ্র করে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে রাশিয়া ও পুতিনের যে প্রবল একগুঁয়ে ছবি ফুটে উঠছে, তাতে মনে হয় সত্যিই নতুন এক স্নায়ুযুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে। রাশিয়া যেন পরাশক্তি হিসেবে সোভিয়েত ইউনিয়নের হারানো জায়গাটা পুনরুদ্ধারে তৎপর হয়ে উঠেছে। ইউক্রেন ও পশ্চিমা দুনিয়ার প্রবল আপত্তি উপেক্ষা করে রাশিয়া ক্রিমিয়াকে নিজের সঙ্গে সংযুক্ত করে নেওয়ার পর থেকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ওপর খেপে গিয়ে তাঁর ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিদের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করার পাশাপাশি রাশিয়ার বিরুদ্ধে বহুমুখী অবরোধ-নিষেধাজ্ঞার জোর উদ্যোগ নিচ্ছেন দেখে মনে হচ্ছিল, দুই প্রেসিডেন্টের মধ্যে বুঝি শিগগিরই আর কোনো কথাবার্তা হবে না।
কিন্তু গত শুক্রবার ওবামা ও পুতিনের মধ্যে আবার টেলিফোনে কথা হলো। উভয় পক্ষ ইউক্রেন-সংকটের একটা কূটনৈতিক সমাধানের আশাবাদ ব্যক্ত করলেন। তার ফল হলো বেশ ত্বরিত: মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি সৌদি আরব থেকে আমেরিকা ফেরার পথে আকাশেই সিদ্ধান্ত নিলেন রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভের সঙ্গে কথা বলবেন। লাভরভ তখন প্যারিসে। কেরি তাঁকে ফোন করলেন; দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মধ্যে কথা হলো। তারপর কেরি বিমান ঘুরিয়ে সোজা গিয়ে নামলেন প্যারিসে। রোববার প্যারিসে রুশ রাষ্ট্রদূতের বাসভবনে সের্গেই লাভরভের সঙ্গে তাঁর বৈঠক হলো টানা চার ঘণ্টা ধরে।
কিন্তু ইউক্রেন-সংকট সমাধানের পথে এক ধাপও অগ্রগতি হলো না। কারণ, কোনো পক্ষই নিজ নিজ অবস্থান থেকে একটুও নড়েনি। বৈঠক শেষে লাভরভ সাংবাদিকদের বলেছেন, কেরির সঙ্গে বৈঠকে তিনি রাশিয়ার এই অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেছেন যে, কিয়েভের পক্ষে আর পুরো ইউক্রেনকে একটি ঐক্যবদ্ধ একক রাষ্ট্র হিসেবে পরিচালনা করা সম্ভব নয়। তাই সেটিকে এখন একটি ঢিলেঢালা ফেডারেল সরকারব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে, যেখানে দেশটির পূর্ব ও দক্ষিণ অংশের সংখ্যাগরিষ্ঠ রুশ জনগোষ্ঠী ব্যাপক স্বায়ত্তশাসন ভোগ করবে। আর জন কেরি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, রাশিয়ার এই অবস্থানের ব্যাপারে তিনি লাভরভকে বলেছেন যে, এ বিষয়ে আলোচনায় ইউক্রেনের বৈধ সরকারকেও সঙ্গে নিতে হবে। ইউক্রেন নিজেই সিদ্ধান্ত নেবে সে ফেডারেল সরকারব্যবস্থা গ্রহণ করবে, নাকি যেমন কেন্দ্রশাসিত আছে তেমনই থাকবে। কেরি স্পষ্ট ভাষায় লাভরভকে জানিয়ে দিয়েছেন, ইউক্রেনকে বাদ দিয়ে ইউক্রেন সম্পর্কে কোনো সিদ্ধান্তের প্রতি আমেরিকা সমর্থন জানাবে না। কেরি লাভরভকে আরও জানিয়েছেন, রাশিয়া ক্রিমিয়াকে নিজের সঙ্গে যুক্ত করে নিয়ে অন্যায় করেছে—আমেরিকা এখনো এই অবস্থানে অনড় আছে। তিনি রাশিয়ার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, ইউক্রেনের সীমান্ত বরাবর রাশিয়া যে সেনা সমাবেশ ঘটিয়েছে তা আর না বাড়িয়ে সব সেনাকে যেন ক্রিমিয়ায় রুশ ঘাঁটিতে ফিরিয়ে নেওয়া হয়। কেরি অবশ্য সাংবাদিকদের এ কথাও স্পষ্ট করে বলেছেন, আমেরিকা ও রাশিয়া এখনো ইউক্রেন-সংকটের ‘কূটনৈতিক সমাধানে’র ব্যাপারে একমত আছে।
কোনো কোনো রাজনৈতিক বিশ্লেষক বলেছেন, তাঁরা আগে থেকেই জানতেন যে প্যারিসে কেরি ও লাভরভের বৈঠক কার্যত ব্যর্থ হবে। এর কারণ মূলত রাশিয়ার দৃঢ় অবস্থান, আমেরিকা ও ইউরোপের সম্মিলিত চাপেও যা একটুও নমনীয় হয়নি। আমেরিকা রাশিয়ার সেনাবাহিনীর নড়াচড়াকে ভয় পাচ্ছে সবচেয়ে বেশি। পশ্চিমা সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, শুক্রবার পর্যন্ত ইউক্রেন সীমান্তে রাশিয়া ৪০ হাজারের বেশি সেনা সমাবেশ ঘটিয়েছে। কিছু সংবাদমাধ্যমে লেখা হয়েছে, রাশিয়ার সেনাদের ইউক্রেনীয় ভূখণ্ডের ভেতরেও পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে, বিশেষত ইউক্রেনের পূর্বাংশের কয়েকটি শহরে, যেখানে রুশ জনগোষ্ঠীর সংখ্যাধিক্য। ওই সব সেনার কোনো সামরিক ব্যাজ থাকছে না, ফলে তাদের চেনা যাচ্ছে না তারা আসলে কোনো সেনাবাহিনীর সদস্য কি না। এ রকম ঘটনা ক্রিমিয়াতেও ঘটেছিল। ক্রিমিয়ায় গণভোটের আগেই পশ্চিমা সংবাদমাধ্যমে যখন খবর বেরোল যে রাশিয়ার সেনারা কার্যত ক্রিমিয়ার নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে, তখন রাশিয়া থেকে দাবি করা হচ্ছিল, তাদের কোনো সেনা ক্রিমিয়ায় প্রবেশ করেনি। সামরিক পোশাক পরা কিছু সশস্ত্র লোক, যাদের কোনো ব্যাজ ছিল না, পশ্চিমা সংবাদমাধ্যমে তাদের ‘অজ্ঞাতপরিচয় সশস্ত্র লোকজন’ বলে বর্ণনা করা হচ্ছিল।
সের্গেই লাভরভ জন কেরিকে বলেছেন, ইউক্রেনে সেনা পাঠানোর ইচ্ছা রাশিয়ার একেবারেই নেই। ভ্লাদিমির পুতিনও টেলিফোনে বারাক ওবামাকে বলেছিলেন, রাশিয়া ইউক্রেন-সংকটের ‘কূটনৈতিক সমাধানে’ আগ্রহী। কিন্তু তাহলে ইউক্রেনের সীমান্ত বরাবর রাশিয়া এত বিপুলসংখ্যক সেনা সমাবেশ ঘটাচ্ছে কেন? আমেরিকা বা পশ্চিমের পক্ষ থেকে রাশিয়াকে এ রকম প্রশ্ন সরাসরি জিজ্ঞেস করা হয়েছে বলে খবর পাইনি। কিন্তু এটা পরিষ্কার যে আমেরিকা ও ইউরোপ রাশিয়ার আরও সামরিক অগ্রসরমাণতা নিয়ে শঙ্কিত। আবার এমন শঙ্কার কি বাস্তব ভিত্তি থাকতে পারে, তাও বোধগম্য নয়। রাশিয়া কী অজুহাতে ইউক্রেনীয় ভূখণ্ডের ভেতরে সেনা পাঠাতে পারে?
বরং ইউক্রেনকে ঘিরে রাশিয়ার দূরপ্রসারী ভাবনার প্রকাশ ঘটে দেশটির কেন্দ্রীয় শাসনব্যবস্থা ভেঙে দিয়ে সেটিকে একটি ফেডারেল রাষ্ট্রে পরিণত করার প্রস্তাবের মধ্যে। রাশিয়া ইউক্রেনকে এমন একটি ফেডারেল রাষ্ট্র হিসেবে দেখতে চায়, যার প্রতিটি অঞ্চল হবে স্বায়ত্তশাসিত, তারা নিজ নিজ অর্থনীতি, করব্যবস্থা, শিক্ষা, সংস্কৃতি, ভাষা এবং প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক ও আমদানি-রপ্তানির বিষয়গুলোতে নিজেরাই সিদ্ধান্ত নেবে। প্যারিসে লাভরভ এসব কথা কেরিকে বিশদভাবে ব্যাখ্যা করে বলেছেন। তিনি এও বলেছেন যে ইউক্রেনে রুশ জনগোষ্ঠীর সংখ্যা যা, তাতে ইউক্রেনের ফেডারেল ব্যবস্থা প্রবর্তন ছাড়া অন্য কোনো উপায় নেই বলে মস্কো মনে করে।
রাশিয়ার এই প্রস্তাবের কথা শুনে কিয়েভের শাসকেরা প্রচণ্ড খেপে গেছেন। তাঁরা যখন ইউক্রেনে কেন্দ্রীয় শাসন আরও শক্তিশালী করতে চাইছেন, তখন সব অঞ্চলকে ব্যাপক স্বায়ত্তশাসনের অধিকার দিয়ে ঢিলেঢালা একটা ফেডারেল ব্যবস্থা প্রবর্তন করার প্রস্তাব যে তাঁরা সরাসরি প্রত্যাখ্যান করবেন, এতে কোনোই সন্দেহ নেই। এখন আমেরিকার প্রস্তাব অনুযায়ী ইউক্রেনের শাসনব্যবস্থা কী হবে, সেটা নিয়ে যদি একটা ত্রিপক্ষীয় আলোচনার উদ্যোগ নেওয়া হয়, এবং সেখানে রাশিয়া যদি ইউক্রেনকে রাখতে রাজি হয়, তাহলে সে আলোচনাও যে ফলপ্রসূ হবে না, তা আগে থেকেই অনুমান করা যায়। আবার আমেরিকা কিয়েভের যে শাসকদের ইউক্রেনের ‘বৈধ সরকার’ মনে করছে, রাশিয়া তাঁদের অবৈধ, সন্ত্রাসী বলে মনে করে, যাঁরা সহিংস পন্থায় ইউক্রেনের নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ভিক্তর ইয়ানুকোভিচকে ক্ষমতাচ্যুত করে দেশ থেকে তাড়িয়ে দিয়ে ক্ষমতা দখল করেছেন। সামনে মে মাসে ইউক্রেনে নতুন করে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হওয়ার কথা; কিন্তু রাশিয়া মনে করে ইয়ানুকোভিচ এখনো ইউক্রেনের বৈধ প্রেসিডেন্ট। সুতরাং মে মাসের নির্বাচনে ইউক্রেন একজন নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করলেও সেই প্রেসিডেন্টকে রাশিয়া স্বীকৃতি দেবে না। কারণ, যিনি প্রেসিডেন্ট হবেন, তিনি হবেন নিঃসন্দেহে একজন মস্কোবিরোধী।
সব মিলিয়ে ইউক্রেন-সংকট জটিলতর হয়ে উঠছে। এই জটিলতা সামনের দিনগুলোতে আরও বাড়ার আশঙ্কাই বেশি; কারণ, ইউক্রেনের সামাজিক সংহতি ইতিমধ্যে ভেঙে পড়েছে, জাতিগত ঘৃণা-বিদ্বেষ ক্রমেই বাড়ছে। বেসামরিক মানুষের হাতে প্রচুর অস্ত্র আছে, উগ্র জাতীয়তাবাদী গোষ্ঠীগুলো ক্রমেই আরও সহিংস হয়ে উঠছে। শান্তিশৃঙ্খলা ভেঙে পড়লে সংখ্যালঘু রুশ জনগোষ্ঠীর নিরাপত্তা ও মানবাধিকার রক্ষার অজুহাতে রাশিয়ার সেনাবাহিনী ঢুকে পড়লে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। এবং তা যদি সত্যিই ঘটে, তাহলে ইউক্রেনের আরও অঙ্গহানির ঝুঁকি বাস্তব হয়ে উঠতে পারে।

মশিউল আলম: সাংবাদিক।

Prothom Alo

তিস্তা বিপন্ন উত্তরাঞ্চল


তিস্তা

বিপন্ন উত্তরাঞ্চল

Prothom Alo

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, বাংলাদেশে তিস্তার পানি পাচার হচ্ছে। বাংলাদেশের জন্য তার এ মন্তব্য তামাশা ছাড়া কিছু নয়। কেন্দ্রীয় সরকারের সদিচ্ছা সত্ত্বেও পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বিরোধিতার কারণে ভারতের সঙ্গে তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি করা সম্ভব হয়নি। ২০১১ সালে যখন আমরা আশায় বুক বেঁধে অপেক্ষা করছিলাম যে তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি হচ্ছে, আমাদের সেই আশা দুরাশা হয়েই থাকল।
তিস্তার চুক্তি না হওয়ায় উত্তরাঞ্চলের বিশাল জনপদ হুমকির মুখে পড়েছে। পানির অভাবে তিস্তা সেচ প্রকল্পের ৬৫ হাজার হেক্টর জমি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ধানি জমির সঙ্গে বাংলাদেশের হূদয়ও যেন ফেটে চৌচির। উৎপাদন না হলে অনাহারে থাকতে হবে, চাষিদের চোখমুখে সেই বিভীষিকাময় চিত্র। তিস্তায় পানি না থাকার কারণে তিস্তা-তীরবর্তী রংপুর, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, নীলফামারী, গাইবান্ধার বিপুল অংশের পানির স্তর অনেক নিচে নেমে গেছে। এভাবে দিনের পর দিন পানির স্তর নিচে নামতে থাকলে উত্তর জনপদের বিশাল অঞ্চল মরুভূমি হয়ে ওঠার আশঙ্কা রয়েছে।
তিস্তা সেচ প্রকল্পের দুটি পর্যায় ছিল। পানির অভাবে পথম পর্যায়ের কাজ শেষ করা হয়নি, এমনকি দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ শুরু করা যায়নি। তিস্তায় পানি না থাকার কারণে এ বছর নির্ধারণ করা লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে না। এ অবস্থায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন বলেন তিস্তার পানি বাংলাদেশে পাচার করা হচ্ছে, তখন সেই বাংলা প্রবাদটিই মনে পড়ে, চোরের মায়ের বড় গলা। যখন রংপুর অঞ্চলের কৃষক করুণ ও ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার, তখন সরকার শুধু যৌথ নদী কমিশনের সভা করে অর্থহীন ভবিষ্যতের সম্ভাবনার কথা শোনাচ্ছে। মমতার তিস্তা নিয়ে ধারাবাহিক মিথ্যাচারের মধ্যেই পানি পাচার করাবিষয়ক মন্তব্যে সেই সত্য কথাটি সহজেই ধরা পড়ে। তিনি পানিও দেবেন না, আবার অপবাদও দেবেন, এটি কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।
বাংলাদেশের অংশে যে তিস্তা রয়েছে, সেই তিস্তায় একেবারেই পানি নেই। তিস্তার পানি ব্যবহার করে তিস্তা সেচ প্রকল্পের অধীনে ৬৫ হাজার হেক্টর জমিতে ধান চাষ করা হতো। এ বছরে সেই চাষাবাদ হচ্ছে না। যে ১০-১২ হাজার হেক্টর জমিতে চাষাবাদের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে, সেখানেও পর্যাপ্ত পানি দেওয়া যাচ্ছে না। তিস্তা সেচ প্রকল্প চালু হওয়ার পর সুবিধাভোগীদের ভাগ্যোন্নয়ন হয়েছিল। মঙ্গার করাল থাবার হাত থেকে তাঁরা রক্ষা পেয়েছিলেন। এক বেলা করে খেয়ে, না-খেয়ে থাকার কষ্ট তাঁদের দূর হয়েছিল। যে বৃদ্ধের বয়স এখন প্রায় ১০০ বছর, তিনিও বলেন তিস্তার এই মৃত দৃশ্য তিনি কোনো দিন দেখেননি। তিস্তাপারের ফেটে যাওয়া জমির সংকট কৃত্রিম সংকট। জমির সঙ্গে কৃষকের প্রাণের যোগ। চাষাবাদহীন এক জমি পড়ে থাকা দেশে এক চাষিকে বলতে শুনেছি—‘বাবারে, জমি খালি পড়ে থাকলে বুকটাও কেমন যেন খালি পড়ে থাকে।’ যে চাষির সব মুহূর্তের সম্পর্ক জমির সঙ্গে, তাঁর চোখের সামনে কৃত্রিম সংকটে ফসলের মৃত্যু আর জমি ফেটে চৌচির হওয়ার দৃশ্য কোনো দিন সেই চাষির পক্ষে সহ্য করা সম্ভব নয়।
তিস্তার পানির দাবিতে আন্দোলন দানা বাঁধছে। ৩০ মার্চ বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল তিস্তা অভিমুখে লংমার্চ করেছে। তাদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল রিভারাইন পিপল। রিভারাইন পিপল তিস্তা নিয়ে সব আন্দোলনকে এক ছাতার নিচে নেওয়ার চেষ্টা করছে। বেশ কিছু সংগঠন ক্ষুদ্র পরিসরে তিস্তা বাঁচাও-এর দাবিতে কাজ করছে। তিস্তা বাঁচানোর জন্য দেশব্যাপী জনমত গড়ে তুলতে হবে।
ভারত সরকার তিস্তার উজানে জলবিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করা, সেচ প্রকল্প স্থাপন করার কাজ অব্যাহত রেখেছে। দেশটি সেচ প্রকল্প আর জলবিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করে তিস্তার পানির ব্যবহার বৃদ্ধি করেছে বলে গণমাধ্যম জানাচ্ছে। কিন্তু বাংলাদেশ সরকার এ ব্যাপারে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হচ্ছে। পানিসম্পদমন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেছেন, তিস্তায় এবার সবচেয়ে কম পানি পাচ্ছে বাংলাদেশ। তিনি আরও জানিয়েছেন, বাংলাদেশ ভালো না থাকলেও প্রতিবেশীরাও ভালো থাকতে পারবে না। পত্রিকায় দেখেছি, ভারতের একটি প্রতিনিধিদল সরেজমিন তিস্তার অবস্থা দেখতে বাংলাদেশে আসছে। তাদের এই আসা যেন লোক দেখানো না হয়।
যে নদীর সঙ্গে বাংলাদেশের লাখ লাখ মানুষের ভাগ্য জড়িত, সেই নদীর পানি একতরফা ভারত নিয়ে নিতে পারে না। একই কথা প্রযোজ্য অন্যান্য অভিন্ন নদীর বেলায়ও। ভারতের অভ্যন্তরীণ রাজনীতির টানাপোড়েনের শিকার বাংলাদেশ হবে কেন? ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সেই চুক্তি সই না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশের মানুষের উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা দূর হবে না।
পাকিস্তানের সঙ্গে একাধিকবার যুদ্ধ সত্ত্বেও ভারত সিন্ধু নদের পানি ভাগাভাগি নিয়ে স্থায়ী চুক্তি করেছে। বাংলাদেশের সঙ্গে অভিন্ন নদীর পানিবণ্টনে সেই ধরনের চুক্তি হবে না কেন? উত্তরে পানি সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে এই দোহাই দিয়ে যে, মমতা তিস্তার চুক্তি ঠেকিয়ে রাখছেন। তাহলে বাংলাদেশের মানুষ যাবে কোথায়? বন্ধুত্ব তো একতরফা হয় না। তাই, তিস্তার ব্যাপারে সরকারের কূটনৈতিক তৎপরতা বাড়ানোর বিকল্প নেই।

তুহিন ওয়াদুদ: শিক্ষক, বাংলা বিভাগ, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর ও সিনেটর, রিভারাইন পিপল।
wadudtuhin@gmail.com
তুহিন ওয়াদুদ | আপডেট: ০০:০৫, এপ্রিল ০১, ২০১৪ |

খবরাখবর

খবরাখবর
http://www.banglanewsupdate.com/khoborakhobor.html
সর্বসাধারণের জন্য নবীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের দরজা ২৪ ঘণ্টাই খোলা রাখবো
নবীগঞ্জ প্রতিনিধি : হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান আলমগীর চৌধুরীর নির্বাচন উত্তর মতবিনিময় সভা শনিবার ২৯ মার্চ রাতে করগাঁও ইউনিয়নের মুক্তাহার গ্রামে অনুষ্ঠিত হয়।
মুক্তিযোদ্ধা রবীন্দ্র চন্দ্র দাশের সভাপতিত্বে এবং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শৈলেন্দ্র কুমার দাশের পরিচালনায় এতে প্রধান অতিথি ছিলেন আলমগীর চৌধুরী। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পদক সাইফুল জাহান চৌধুরী ও উপজেলা জাতীয় হিন্দু মহাজোটের সাধারণ সম্পাদক প্রভাষক উত্তম কুমার পাল হিমেল। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সুনীল চন্দ্র দাশ, ইউপি সদস্য শশাংক শেখর দাশ, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা আশীষ কুমার দাশ, পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক অনন্ত দাশ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা সুদীন চন্দ্র দাশ প্রমুখ।
প্রধান অতিথি নতুন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলমগীর চৌধুরী বলেন, সর্বসাধারণের জন্যে নবীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সেবার দরজা ২৪ ঘণ্টাই খোলা থাকবে। সকলের সার্বিক সহযোগিতায় নবীগঞ্জকে দেশের একটি মডের উপজেলায় উন্নীত করবো।
 
সিলেট ও কানাইঘাটে চেয়ারম্যান পদে আলীগ ও বিএনপি প্রার্থীরা পুননির্বাচিত
নিজস্ব প্রতিবেদক : সিলেট ও কানাইঘাট উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বর্তমান চেয়ারম্যানরাই পুননির্বাচিত হয়েছে। এর মধ্যে একজন আওয়ামী লীগের এবং অন্যজন বিএনপির সমর্থিত। দুজনেই নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বীকে বিপুল ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করেছেন।
রবিবার ২৩ মার্চ চতুর্থদফায় উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সিলেটের সদর ও কানাইঘাটে ভোটগ্রহণ হয়। তবে প্রতিটি কেন্দ্রেই ভোটারের উপস্থিতি খুব কম। সব মিলিয়ে শতকরা ৪০ ভাগ ভোট পড়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
মোটামুটি শান্তিপূর্ণ পরিবেশেই ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়। তবে সিলেট সদর উপজেলার আব্দুল লতিফ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে আওয়ামী লীগ সমর্থকরা জোরপূর্বক ভোট দেয়ার চেষ্টা করে বলে বিএনপি নেতারা অভিযোগ করেন।
কানাইঘাট উপজেলার শিবনগর কামিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে বিকেল পৌণে ৪টার দিকে ভোটবাক্স ছিনতাই হওয়ায় এই ভোটকেন্দ্রের নির্বাচন বাতিল করা হয়। তবে এই কেন্দ্রের ভোট ফলাফলে কোন প্রভাব ফেলতে পারেনি।
প্রায় একই সময় এ উপজেলার রায়গড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ সমর্থক ও বিএনপি সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে আহত হন মোহনা টেলিভিশনের সিলেটের ক্যামেরাপারসন ফেরদৌস আহমদসহ ৩ জন। ফেরদৌস আহমদকে সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বিস্তারিত পড়ুন
 
নবীগঞ্জে বাস ও কারের মুখোমুখি সংঘর্ষে স্বামী-স্ত্রীসহ ২ জন নিহত
উত্তম কুমার পাল হিমেল, নবীগঞ্জ : ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার আউশকান্দি সিএনজি স্টেশনের সামনে এক দুর্ঘটনায় স্বামী-স্ত্রীসহ ২ জন নিহত হয়েছে। এ সময় অপর ৩ জন আহত হয়।
শুক্রবার ২১ মার্চ বিকাল ৪টার দিকে সুরমা পরিবহনের যাত্রীবাহী একটি বাসের সাথে ঢাকাগামী একটি প্রাইভেট কারের মুখোমুখি সংঘর্ষে এই দুর্ঘটনা ঘটে। এতে ঘটনাস্থলেই প্রাইভেট কারের যাত্রী রজব আলী মাস্টার (৫০) ও তার স্ত্রী মণি বেগম (৪০) মারা যান।
দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত নজরুল ইসলামের শ্বাশুড়ি জানু বেগমকে সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহত অন্য দুজনকে প্রাথিমক চিকিৎসা দেয়া হয়।
তবে রজব আলী দম্পতির ৪ বছরের শিশু সন্তান ফেরদৌস আলী অক্ষত রয়েছে। তাদের বাড়ি ঢাকার আশুলিয়া থানার দত্তপাড়া এলাকায় বলে জানা গেছে।
এ দুর্ঘটনায় বিক্ষুব্ধ জনতা ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অন্তত ১ ঘণ্টা অবরোধ করে রাখে। খবর পেয়ে নবীগঞ্জ থানা ও হাইওয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করে। স্থানীয় সংসদ সদস্য জাতীয় পাটির কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাংগঠনিক সম্পাদক এম. এ মুনিম চৌধুরী বাবু ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
আরো জানা গেছে, রজব আলী স্ত্রী, সন্তান ও শ্বশুরবাড়ির আত্মীয়দের নিয়ে সিলেটে মাজার জিয়ারত শেষে ঢাকা ফেরার পথে দুর্ঘটনার শিকার হন। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে হবিগঞ্জ মর্গে প্রেরণ করেছে।
 
নানা কর্মসূচিতে বিশ্ব মূকাভিনয় দিবস উদযাপিত হয়েছে
২২ মার্চ বিশ্ব মূকাভিনয় দিবস। এ উপলক্ষে বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়।
বিশ্ব মূকাভিনয় দিবস উপলক্ষে ঢাকায় শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়।
বাংলাদেশে অবস্থানরত ইন্টারন্যাশনাল মাইম অ্যাম্বাসেডর কাজী মশহুরুল হুদার উদ্যোগে এই শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়।
শোভাযাত্রাটি সকাল ১০টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে থেকে বের হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে গিয়ে শেষ হয়।
পরে সেখানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাচে উন্মুক্ত মঞ্চে বিভিন্ন দলের মাইম প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়।
শোভাযাত্রায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, দি আমেরিকান নিও মাইম এন্ড মুভমেন্টের প্রতিষ্ঠাতা প্রখ্যাত আন্তর্জাতিক মূকাভিনেতা কাজী মশহুরুল হুদা, বাংলাদেশ মূকাভিনয় ফেডারেশনের সভাপতি জাহিদ রিপন, মাইম আর্টের নিথর মাহবুব, বাংলাদেশ হুদা মাইম ক্লাবের জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহাগ আশরাফ রাজ, মাইম আর্টের মীর লোকমান প্রমুখ।
এছাড়াও বাংলাদেশ হুদা মাইম ক্লাব, স্বপ্নদল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মাইম এ্যাকশন, মাইম আর্ট, জ্যান্টেলম্যান পেন্টমাইম ও প্যান্টমাইম সহ বিভিন্ন সংগঠনের কর্মী-সংগঠকরা অংশ নেন।
২০১১ সালে মার্সেল মার্সুর জন্য দিনটিকে জাতিসংঘের মাধ্যমে নির্ধারিত করা হয়। মার্সেল মার্সুর জন্ম ও মৃত্যু তারিখ ছিল ২২ মার্চ। ২০১৪ মালে ওয়াল্ড মাইম ডে তে মার্সেল মার্সুর ৯১তম জন্মবার্ষিকী উদযাপিত হয়েছে।
 
পরীক্ষা শেষ না হতেই খাতা কেড়ে নেয়ায় ভাংচুর চালিয়েছে এসএসসি পরীক্ষার্থীরা
altতনুজা শারমিন তনু, দিনাজপুর : পরীক্ষা শেষ না হতেই পরীক্ষার্থীদের খাতা কেড়ে নেয়ায় দিনাজপুর জিলা স্কুলে এসএসসি পরীক্ষার্থীরা ভাংচুর চালিয়েছে।
বিক্ষুব্ধ পরীক্ষার্থীরা ৩ ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখে জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও পরীক্ষা কেন্দ্র সচিব শাহীন আখতারকে। পুলিশ ডেকেও কোন সুরাহা না হওয়ায় শেষপর্যন্ত অভিভাবকদের মধ্যস্থতায় ভুলে জন্য ক্ষমা চেয়ে তিনি ছাড়া পান বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে।
মঙ্গলবার ৪ মার্চ ছিল এসএসসির পদার্থবিদ্যা, ইতিহাস ও ব্যবসায়ী পরিচিতি বিষয়ে পরীক্ষা। যথা নিয়মে সকাল ১০টায় তা শুরু হয়। শেষ হওয়ার কথা ছিল বেলা একটায়; কিন্তু এর ১৫ মিনিট আগে অর্থাৎ বেলা পৌণে একটায় কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ পরীক্ষার খাতা কেড়ে নেয়া শুরু করে বলে পরীক্ষার্থীরা অভিযোগ করেছে।
পরীক্ষা কেন্দ্র কর্তৃপক্ষের এ আচরণে বিক্ষুদ্ধ হয়ে উঠে পরীক্ষার্থীরা। তারা এর প্রতিবাদ জানায়; কিন্তু তাদের সাথে রূঢ় আচরণ করে কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ। এতে পরীক্ষার্থীরা আরো বিক্ষুদ্ধ হয়ে উঠে এবং একপর্যায়ে কেন্দ্র সচিব প্রধান শিক্ষক শাহীন আখতারের কার্যালয় ঘেরাও করে কক্ষের দরজা ও জানালা ভাংচুর করে। তারা কেন্দ্র সচিবের অপসারণ চেয়ে স্লোগানও দেয়।
পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ তলব করেন কেন্দ্র সচিব। এতেও কোন ফল না পেয়ে তিনি কিছু অভিভাবককে মুঠোফোনে ডেকে আনেন। পরে অভিভাবকদের মধ্যস্থতায় ও পুলিশি প্রহরায় বিকেল পৌণে ৪টায় কক্ষ থেকে বের হয়ে হ্যান্ড মাইকে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রেখে তিনি ভুলের জন্য ক্ষমা চান।
 
একটি মহল ওরাওদের নিয়ে ফায়দা হাসিলের চেষ্টা করছে : টুলটিকর ইউপি চেয়ারম্যান
নিজস্ব প্রতিবেদক : সিলেট সদর উপজেলার টুলটিকর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবদুল মোছাব্বির দাবি করেছেন, বালুচর এলাকায় ওরাও সম্প্রদায়ের কোনো জায়গা-জমি তিনি দখল করেননি।
শনিবার ১ মার্চ সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে আহুত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দাবি জানান।
আবদুল মোছাব্বির বলেন, অনেক ওরাও পরিবারকে তার জায়গায় তিনি দয়াবশত থাকতে দিয়েছেন। হতদরিদ্র ২৫টি পরিবারকে ঘর বানিয়ে বসবাস করার সুযোগ ও টিউবওয়েল স্থাপন করে দিয়েছেন; কিন্তু একটি মহল আদিবাসী ও ওরাওদের নাম ব্যবহার করে ফায়দা হাসিলের চেষ্টা করছে।
তিনি বলেন, সম্প্রতি বালুচর এলাকায় ওরাং সম্প্রদায়ের জায়গা নিয়ে নানারকম অপপ্রচার ও বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে। তাকে জায়গা দখলকারী উল্লেখ করে প্রচার করা হচ্ছে বিভিন্ন গণামাধ্যমে, যা খুবই দু:খজনক।
তার জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে একটি কুচক্রী মহল তিনি ও তার ভাইকে জড়িয়ে বালুচর চন্দনটিলার রথীন্দ্র ওরাংয়ের ভূমি নিয়ে মিথ্যাচার করছে বলে দাবি করে চেয়ারম্যান বলেন, রথীন্দ্র ওরাও নয়-ওরাও সম্প্রদায়ের কারো জায়গাই তিনি দখল করেননি বা করার প্রশ্নই উঠে না। রথীন্দ্র ওরাওসহ অনেক পরিবারকে তিনি ওই জায়গায় দয়াবশত থাকতে দিয়েছেন।
এক প্রশ্নের জবাবে আবদুল মোছাব্বির জানান, তিনি টিলা কিংবা ওরাওদের কোন জায়গা দখল না করার পরও তাকে ভূমিখেকো উল্লেখ করা হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে তার ভাই রোটারিয়ান আবুল বশর, আত্মীয় ছমরু মিয়া ও ভাতিজা এমাদুল হক উপস্থিত ছিলেন।
 
মৌলভীবাজার কুলাউড়া ও ওসমানীনগরে সড়ক দুর্ঘটনায় শিশু ও মহিলাসহ নিহত ৩
বড়লেখা প্রতিনিধি : মৌলভীবাজার সদর উপজেলায় বাসচাপায় জিলু মিয়া (৪০) নামের এক মোটর সাইকেল আরোহী নিহত হয়েছেন।
শনিবার ১ মার্চ দুপুর ১২টার দিকে মৌলভীবাজার-সিলেট মহাসড়কের বাবুবাগ এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত জিলু মিয়া সদর উপজেলার মনুমুখ ইউনিয়নের সাধুহাটি গ্রামের নওয়াব উল্লার ছেলে। প্রত্যক্ষদর্শী ও এলাকাবাসী জানায়, জিলু মিয়া মোটর সাইকেলযোগে মৌলভীবাজারের দিকে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে বাবুবাগ এলাকায় বিপরীত দিক থেকে আসা সিলেটগামী একটি বাস তাকে চাপা দিলে তিনি গুরুতর আহত হন। তাকে উদ্ধার করে প্রথমে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পথে তিনি মারা যান।
এদিকে কুলাউড়া উপজেলায় সড়ক দুর্ঘটনায় শুক্রবার দুপুরে রিমন আহমদ (১০) নামের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ জানায়, বেলা ২টায় মৌলভীবাজার-কুলাউড়া সড়কের লুয়াইউনি এলাকায় রাস্তা পারাপারের সময় কুলাউড়াগামী একটি ট্রাক তাকে চাপা দিলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
কুলাউড়া থানার ওসি মো. হাসানুজ্জামান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ট্রাকটি নিয়ে চালক পালিয়ে গেছে। এ ঘটনায় কোনো মামলা হয়নি।
ওসমানীনগর প্রতিনিধি : সিলেটের ওসমানীনগরে সড়ক দুর্ঘটনায় মনসুরা বেগম (৪৫) নামের এক মহিলা নিহত হয়েছেন। শুক্রবার বেলা ২টার দিকে শেরপুর সেতুতে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, মনসুরা বেগম রিক্সাযোগে শেরপুর সেতু পার হওয়ার সময় ঢাকাগামী একটি পাথর বোঝাই ট্রাক রিক্সাটিকে চাপা দিলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। হাইওয়ে পুলিশ ট্রাকটিকে আটক করলেও চালক পালিয়ে গেছে।
 
বানিয়াচংয়ে মামলার নারী স্বাক্ষীকে কুপিয়ে হত্যা ॥ আজমিরীগঞ্জে টমটম উল্টে নিহত ১
বানিয়াচং  প্রতিনিধি : হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে একটি মামলার নারী স্বাক্ষীকে দুর্বৃত্তরা কুপিয়ে হত্যা করেছে।
পুলিশ জানায়, নিহত সবুরা খাতুন (৪৫) উপজেলার গুণই গ্রামের আব্দুল মালেকের স্ত্রী। তিনি গ্রামের একটি সংঘর্ষের মামলার স্বাক্ষী ছিলেন। বৃহস্পতিবার ২৭ ফেব্রুয়ারি ভোরে একদল দুর্বৃত্ত তার ঘরে প্রবেশ করে তাকে কুপিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যায়।
খবর পেয়ে সকাল ১০টায় বানিয়াচং থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য হবিগঞ্জ মর্গে প্রেরণ করে।
বানিয়াচং থানার অফিসার ইনচার্জ সামসুল আরেফিন জানান, ধারণা করা হচ্ছে, মামলার আসামিরা মহিলাকে হত্যা করেছে।
অন্যদিকে আজমিরীগঞ্জ উপজেলার শিবপাশায় জিপের ধাক্কায় টমটম উল্টে ১ জন নিহত ও ৪ জন আহত হয়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায়। নিহত মাহবুবা বেগম (৪৫) শিবপাশা গ্রামের জুলফিকার আলমের স্ত্রী। আহতরা হলেন, একই গ্রামের বিপুল চৌধুরীর স্ত্রী ছাদিয়া বেগম, মুখলেছুর রহমানের স্ত্রী আনোয়ারা বেগম, বিপুল চৌধুরীর ৭ মাস বয়সী মেয়ে স্নেহা ও লিল মিয়ার স্ত্রী সাফিয়া (৪২)।
এলাকাবাসী জানান, একই পরিবারের সদস্যরা টমটম যোগে শিবপাশা থেকে এক আত্মীয়ের মৃত্যুসংবাদ পেয়ে পশ্চিমবাগ গ্রামে যাচ্ছিলেন। এ সময় আজমিরীগঞ্জ থেকে বানিয়াচংগামী একটি জিপ ধাক্কা দিলে টমটমটি উল্টে গিয়ে দুর্ঘটনায় পতিত হয়।
 
ঠাকুরগাঁওয়ে আওয়ামী লীগের দুই প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ ॥ আহত ১৫ জন
ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি : উপজেলা পরিষদ নির্বাচনী প্রচারসভাকে কেন্দ্র করে ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলার নেকমরদ বাজারে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী ও বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে কমপক্ষে ১৫ জন আহত হয়েছে।
সোমবার ২৪ ফেব্রুয়ারি রাত আনুমানিক সাড়ে ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
এলাকাবাসী জানায়, নেকমরদ বাজারে আওয়ামী লীগ সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী সইদুল হকের একটি নির্বাচনী সভা চলছিল। এ সময় আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আব্দুল কাদেরের সমর্থকরা সভায় ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। এ নিয়ে দুগ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে।
আহতদের মধ্যে জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মকবুল হোসেন বাবু ও আইন বিষয়ক সম্পাদক ইন্দ্রনাথ রায় রয়েছেন।
পুলিশ ও বিজিবি ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
 
ছেলেমেয়েদের সুশিক্ষায় শিক্ষিত করে তাদের সম্পদে পরিণত করতে হবে : সাংসদ ইয়াসিন
ঠাকুরগাঁও পতিনিধি : ঠাকুরগাঁও-৩ আসনের সংসদ সদস্য অধ্যাপক ইয়াসিন আলী বলেছেন, যা কিছু দান করা যায় সেগুলোর মধ্যে শ্রেষ্ঠ হলো শিক্ষা দান। ইএসডিও পাঠশালা ও ইকো কলেজের মাধ্যমে অবহেলিত এ অঞ্চলে সেই দানই করছে, যার তুলনা হয় না।
রবিবার ২৩ ফেব্রুয়ারি বিকেলে পীরগঞ্জ ইকো-পাঠশালার যুগপূর্তি উৎসবে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, দিন দিন আমাদের সম্পদ কমছে। এই অবস্থায় আমাদের ছেলেমেয়েদের সুশিক্ষায় শিক্ষিত করে সম্পদে পরিণত করতে হবে।
ইএসডিওর নির্বাহী পরিচালক ড. শহিদ উজ জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগ নেতা ইমদাদুল হক, উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাববীর আহমদ, থানার অফিসার ইনচার্জ একেএম মেহেদী হাসান, ইকো পাঠশালা ও ইকো কলেজের অধ্যক্ষ সেলিমা রহমান, প্রেসক্লাবের সভাপতি মেহের এলাহী, উপজেলা লেডিস ক্লাব সভাপতি ইয়াসমিন আহমদ, উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো. নজরুল ইসলাম, উপজেলা প্রকৌশলী তাজমিল হক, প্রভাষক প্রশান্ত বসাক, ইএসডিওর সেক্টর কো-অর্ডিনেটর শাহ মো. আমিনুল হক প্রমুখ বক্তৃতা করেন।
সভাপতির বক্তব্যে ইএসডিওর নির্বাহী পরিচালক ড. শহিদ উজ জামান বলেন, ইকোপাঠশালা ও ইকো কলেজের অভিযাত্রা তখনই স্বার্থকরূপ লাভ করবে, যখন এই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা সর্বোচ্চ শিক্ষা শেষে দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সরকারি ও বেসরকারি দফতর থেকে জনগণের কল্যাণে তাদের ভূমিকা রাখতে পারবে।
 
দেশের উন্নয়নে শিক্ষার কোন বিকল্প নেই : কুমিল্লায় পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল
altমো. আলাউদ্দিন, নাঙ্গলকোট : পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল বলেছেন, দেশের উন্নয়নে শিক্ষার কোন বিকল্প নেই। তাই সবাইকে শিক্ষার প্রতি বেশি গুরুত্ব দিতে হবে।
কুমিল্লার নাঙ্গলকোট হাছান মেমোরিয়াল ডিগ্রি কলেজের ৩০তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী ও অমর একুশে উপলক্ষে শুক্রবার ২১ ফেব্রুয়ারি আয়োজিত আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
কলেজের প্রতিষ্ঠাতা সাবেক সংসদ সদস্য ডা. একেএম কামারুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে পরিকল্পনা মন্ত্রী জানান, অচিরেই নাঙ্গলকোট হাছান মেমোরিয়াল ডিগ্রি কলেজকে সরকারিকরণ ও অনার্স কোর্স চালু করা হবে।
অধ্যক্ষ ছাদেক হোসেন ভূঁইয়ার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নাঙ্গলকোট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ সাইদুল আরিফ, পৌর মেয়র সামছুউদ্দিন কালু, উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি অ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান লিটন, পৌর আওয়ামী লীগ সভাপতি একেএম মনিরুজ্জামান, কলেজ পরিচালনা কমিটির সদস্য আবুল কাশেম, থানার অফিসার ইনচার্জ নজরুল ইসলাম, মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার এবিএম আবদুল হান্নান প্রমুখ।
 
মৌলভীবাজার সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীদের নাম ঘোষণা
বড়লেখা প্রতিনিধি : আগামী ২৩ মার্চ অনুষ্ঠেয় মৌলভীবাজার সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের জন্যে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করা হয়েছে।
উপজেলা আওয়ামী লীগ ও ১২টি ইউনিয়নের দায়িত্বশীল নেতারা গোপন ভোটের মাধ্যমে প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করেন।
এতে চেয়ারম্যান পদে জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি মুহিবুর রহমান তরফদার, ভাইস চেয়ারমান পদে জেলা আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদক আব্দুল মতিন ও নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে রাহিলা আক্তারকে সমর্থন দেয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার ২০ ফেব্রুয়ারি রাতে সমাজকল্যাণ মন্ত্রী সৈয়দ মহসীন আলীর বাসভবনে দলের প্রার্থীতা চূড়ান্ত করতে তৃণমূল নেতাকর্মীদের নিয়ে গোপন ভোট অনুষ্ঠিত হয়। এতে ৩শ নেতাকর্মী তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন।
এদিকে প্রার্থী সমর্থনের বিষয়টিকে ষড়যন্ত্র বলে অভিযোগ করেছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও মৌলভীবাজার চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি কামাল  হোসেন। তিনি বলেছেন, এবার তিনি চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন। তাকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সুযোগ না দিতেই গোপন বৈঠক ডেকে প্রার্থীতা চূড়ান্ত করা হয়েছে।
অন্যদিকে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মশিউদ আহমদ জানিয়েছেন, তৃণমূল নেতাকর্মীদের ভোটে সুষ্ঠুভাবে প্রার্থী মনোনীত করা হয়েছে।
 
নাঙ্গলকোটে চেয়ারম্যান-ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২৪ জন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র দাখিল
মো. আলাউদ্দিন, নাঙ্গলকোট : উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের জন্যে কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে শনিবার ১৫ ফেব্রুয়ারি মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার শেষদিনে চেয়ারম্যান, পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২৪ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
এর মধ্যে রয়েছেন, চেয়ারম্যান পদে ১১ জন, পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৯ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪ জন। উপজেলা সহকারী রিটার্নিং অফিসার দেলোয়ার হোসেনের নিকট প্রার্থীরা তাদের মনোনয়নপত্র দাখিল করেন।
চেয়ারম্যান প্রার্থীরা হলেন, আওয়ামী লীগের পৌর মেয়র মো. সামছুউদ্দিন কালু ও হুমায়ুন কবির, বিএনপির শাহজাহান মজুমদার, একেএম নূরুল আফসার নয়ন, নজির আহম্মদ ভূঁইয়া, সামছুল হক, এটিএম জসিম উদ্দিন, শাহজাহান কবির ও বাবুল ইসলাম মজুমদার, জাতীয় পার্টির কাজী জামাল উদ্দিন এবং ঢালুয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নাজমুল হাসান ভূঁইয়া।
ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীরা হলেন, জাকের হোসেন, মো. তৌহিদুর রহমান মজুমদার, জাহাঙ্গীর আলম মজুমদার, মফিজুর রহমান সোহেল, মঈনুল ইসলাম মজুমদার, আবুল কাশেম গাফুরী, এএসএম মহিউদ্দিন ও আবু ইউসুফ ভূঁইয়া।
মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীরা হলেন, বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান নাছরিন আক্তার মুন্নী, ছালেহা বেগম (পলি মেম্বার), কুলসুম আক্তার ও রোকেয়া আক্তার।
 
সিলেট বিভাগের ১২টি সহ সারা দেশে ৯৭টি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রস্তুতি সম্পন্ন
খলিলুর রহমান : প্রথম দফায় সারা দেশে ৯৭টি উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বুধবার ১৯ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এর মধ্যে সিলেট বিভাগেরে রয়েছে ১২টি। এই উপজেলাগুলো হচ্ছে সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইনঘাট, জকিগঞ্জ, জৈন্তাপুর, গোলাপগঞ্জ ও বিশ্বনাথ, সুনামগঞ্জের ছাতক, দোয়ারাবাজার ও দক্ষিণ সুনামগঞ্জ, মৌলভীবজারের কুলাউড়া এবং হবিগঞ্জের মাধবপুর ও বাহুবল। ইতোমধ্যে সবখানেই সেনা মোতায়েনসহ ভোট গ্রহণের সার্বিক প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। সকাল ৮টা থেকে বিরতিহীনভাবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ চলবে।
সিলেটের ৬টি উপজেলায় ৩শ ৫৯টি ভোট কেন্দ্রে ২ হাজার ৩৭টি কক্ষে ভোট গ্রহণ করা হবে। এ জন্যে ৩শ ৫৯ জন প্রিজাইডিং অফিসার, ২ হাজার ৩৭ জন সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার ও ৪ হাজার ৭৪ জন পোলিং অফিসার নিয়োগ করা হয়েছে।
এই ৬টি উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ২৫ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে  ৪৫ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২২ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
কুলাউড়া : মৌলভীবাজারে একমাত্র কুলাউড়ায় উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
এখানে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের একক প্রার্থী আসম কামরুল ইসলাম (কাপ-পিরিচ); কিন্তু বিএনপির প্রার্থী রয়েছেন ২ জন। তারা হলেন শওকতুল ইসলাম শকু (দোয়াত-কলম) ও আব্দুল হান্নান (আনারস)। এছাড়া জাসদ প্রার্থী আলাউদ্দিন (মোটর সাইকেল) এবং জাতীয় পার্টির প্রার্থী গিয়াস মিয়া (টেলিফোন)।
বিস্তারিত পড়ুন
 
উজিরপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আলীগের মনোনয়ন পেলেন ইকবাল অপূর্ব সীমা
অপূর্ব লাল সরকার, আগৈলঝাড়া : বরিশালের উজিরপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ একক প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে।
মঙ্গলবার ১৮ ফেব্রুয়ারি সকালে আগৈলঝাড়ায় জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আবুল হাসানাত আবদুল্লাহর সভাপতিত্বে তার বাসায় অনুষ্ঠিত জেলা আওয়ামী লীগের বিশেষ সভায় প্রার্থী চূড়ান্ত করা হয়।
প্রার্থীরা হলেন, চেয়ারম্যান পদে হাফিজুর রহমান ইকবাল, পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান পদে অপূর্ব কুমার বাইন রন্টু ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে সীমা রানী শীল।
বিশেষ সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের জেলা সাধারণ সম্পাদক বরিশাল-২ আসনের সাংসদ অ্যাডভোকেট তালুকদার মো. ইউনুস ও কেন্দ্রীয় নেতা অ্যাডভোকেট বলরাম পোদ্দার। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা সুখেন্দু শেখর বৈদ্য, উজিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি এসএম জামাল হোসেন, সাবেক সভাপতি আব্দুল খালেক আজাদ, সহ সভাপতি ও ওটরা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান ইকবাল, আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল হাকিম সেরনিয়াবাত, অ্যাডভোকেট শহিদুল ইসলাম মৃধা, কামাল হোসেন সবুজ, মিজানুর রহমান কবির, সিরাজুল ইসলাম ও সীমা রানী শীল।
 
আরো খবর...